Wednesday, September 16, 2020

দীর্ঘ কবিতা - বেবী সাউ


আত্মানাংবিধি

------------------


মুছেছি রাতদিন মুচছি মৃদুশোক

উঠছে বেজে বাঁশি; রাত্রি ভাঙা আলো

অপার আনন্দে, সেও বিস্তারিত 

ধুলোয় রাস্তার দৃশ্য অবগত...


তাহার প্রান্তের দৃশ্য উড়ে যায় 

তাহার হাতে বসে শান্ত বনপথ... 

গ্রীষ্ম ভেঙে গেছে তৃষ্ণা তার আজ

আঁচলা ভরে দেব, এই রক্তপাতে? 


অতীত ভেসে যায়, বোঝে জন্মবোধ 

হাঁটছে একা একা প্রকৃত বারবেলা 

এ অনুশাসনের বিরাট দৃশ্যটি

কান্না দেবে তাকে? বিষাদে চারপাশ?... 


আসল শকুনের চোখের পরপারে 

তুমিও শিখে গেছ ফাঁদের কৌশল 

তর্কে অহেতুক প্রথমে বহুদূর 

যেসব তথ্যের ভাঙাও প্রথাগত... 

ভেঙেছে সংসার ভাঙা আর্শিকাচ 

নেভানো উনুন সে ঘন চুম্বনের 

মৃদু আঁচে সেও বুঝছে বনপথ  

ইনশাআল্লাহ ইনশাআল্লাহ 



যেপথ পারাপার যেপথ তথ্যের 

পেরিয়ে গেছে সেই অতীত আলোটিও 

তাকে কী তুমি দেবে সহায়কালটিকে

বলবে তুলে ধরে 'তুমি সর্বস্ব'... 


তাকেই দেব আমি,  আজান কালবেলা 

পুবের রোদ দেব, অবাক পরিযায়ী... 

মৃতের চোখ বেয়ে আজও অশ্রুধারা 

ভেজা সে আলোটিকে ডাকবে 'আনন্দী'! 


এসো হে পথগান, এসো তো ঘরে আজ 

যা কিছু আছে দেব দু'মুঠো দই চিঁড়ে 

পথিক তুমি হলে এ পথ আমারও যে 

ধুলোতে লিখে রাখি ফেরার মথুরাকে...



দুঃখে ভিজে উঠি, সুখের জ্বালা চোখে 

বিরহ বেলা যায় পথের নিশানায় 

গভীর হলে পথ, কিংবা খাদময় 

দেবে কী তুমি হাত, ধরার ছলনায়! 

এ পথ বাঁশুরীর, বাঁশীটি ডাক দেয় 

মেঘেতে ভরে ওঠে সমাজ সংসার 

করুণ বিরহ যে তাহার পাশে লিখি 

একলা রাধিকারা গাইছে জারিগান... 


বিদায় ঘন হলে, সময়ে ভাসে চোখ 

ডাকছে হাঁসদল জলের সংসারে 

জমিয়ে রাখা সেই রাজ্য নীতিহীন 

বিরহ জাগাবে না, দু'চোখে জল ভরে? 


'


যেসব চোরাবালি বুঝেছে মর্মর 

পা'য়েতে দহলিজ ওপারে জন্নত

আঁকছি কালবেলা, রোজই তো মেনে নেওয়া

আঘাত দিতে দিতে শিখেছি ক্ষত চেনা...

 

কে তাকে অনুভবে রাস্তা দিতে পারে! 

কে সেই অভিমান, একা অনুসরণে

শান্ত চোখ জানে, এ মেঘ বর্ষণে 

অধিক যত্ন নিতে কাজল চোখে টানে...


এভাবে মুখ টিপে জ্যোৎস্নার আলো 

ঘটছে চারপাশে ব্যাপার ছোটোখাটো 

এখানে যেমনটি বুদ্ধ বলেছেন

ওপারে ক্রাইস্ট লেখে ক্রুশরক্ত...


আমিও আমাদের তুমিও তোমাদের 

ভাতের রোজগার গন্ধ ছেঁকে তোল 

জিভের স্বাদটুকু বুঝেছে মহিষেরা 

বুঝেছে ঘাসপাতা হিমের সাদা চোখ


হিংসার রঙ জানে রক্ত খুনী হাত

জিভটি লকলকে যে হিমোগ্লোবিনে 

তাকেও ফাঁদ দেবে, তাকেও ভোট বলে

আড়ালে ডেকে আজ শেখাবে কৌশল!  


গলছে ধানক্ষেত জমাট শীতবন 

লেগেছে ফাটাঠোঁটে পুরুষ বোরোলীন 

হাঁটছে আয়োজন আর্কাইভে সেজে

ম্যাপল বনেতেই সারাহ নতুনের

মধ্যরাতে শ্বাস বন্ধ করিডোরে

চড়ুই পালকের ভ্রান্ত দিক গান 

ধীরে সাধ্যাতীত জমানো রুকস্যাক 

নামতা ভ্রমণের গল্প লিখে ফেলে...

 

রেখায় বৈষ্ণব ভাসে পদ্ম-প্রেম

নীচেই কোরকের বিষাক্ত ছোবল 

বালিশে ঘামনুন ঘ্রাণের জটিলতা 

আবার কেঁপে ওঠে এ অগ্রহায়ণ 

ভাতের লোভ তাকে দিয়েছে বশ্যতা! 

কে যেন দিয়ে যায় খিদের ভরা ঋণ 

শরীরে ঘুম ঘুম বনেদী দরজায়

কে দেবে বিপ্লব! কেমন অধিকার!

এ দেশ গরীবের রক্তে নাচে ধিন ধিন... 



তবুও অন্ধেরা করছে শুরুয়াৎ 

বিরাট বক্রতা মৃতের নাম আর

এই মহম্মদ অন্ধ আকবর 

ওপাশে বুদ্ধের এ জীবনাবসান 

এপাশ কেঁদেছিল জমা জন্মবোধে 

ভেঙেছে ব্যারিকেড সোপান রাত্রির 

তবু কী পেরেছিল অশ্রুজল ধুতে? 

পেরেছে আজও কি সে দু'মুঠো ভাত দিতে?



ডানার ধ্বনি বাজে নারীর অবসাদে 

অতল এক জোড়া এয়োতি শাঁখা-পলা 

ভোরের আলো নিয়ে কাগজ বিক্রেতা 

রক্তঠোঁটে বাজে ভাঙা মূল্যবোধ 

জেনেছে সেও বুঝি 'আত্মানাং বিধি' 

পথের চিৎকার 'অহম অস্মি' শোক 

জীবন একটাই জীবন একটাই 

ভাতের শোকে তার মৃত্যু আঁকা হোক...



এ ভূমি আমাদের এ ভূমি তোমাদের 

ধর্ম সবটাই বাঁচার মতো হোক... 










অলংকরণ- কার্তিক ঢক্




4 comments:

  1. লেখাটি ভাল বেশ । কিন্তু দীর্ঘকবিতাটিতে বেশিরভাগ স্তবক চারটি পংক্তি দিয়ে তৈরি, কিছু কিছু স্তবক আটটি বা ততধিক পংক্তি দ্বারা নির্মিত হয়েছে । এই স্তবকবিন্যাসটা শুরু থেকে সমান হলে ভাল হত, বা অসমান হলেও ভাল হত । কবিতাটিতে দৃশ্যবর্ণনা ছড়ানো, কাব্যভাবনার তেমন না হলেও সেই ভাবনা প্রসারিত বেশ । ভাল লাগল ।

    ।। শুভদীপ নায়ক ।।

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete

কথামুখ

 অপুর্ব  জীববৈচিত্র্য ভরা আমাদের এই পৃথিবী। কিন্তু স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষের জন্য, তাদের অমানবিক ও অবিবেচকের মতো বিভিন্ন কার্মকান্ডের জন্য...